শাকসবজির উপকারীতা ও প্রয়োজনীয়তা
অনেকেই খাদ্য এবং পুষ্টিকে একই মনে করেন। আসলে এটি ভুল ধারণা। কারণ খাদ্য পুষ্টিকর নাও হতে পারে, তবে পুষ্টি অবশ্যই খাদ্য। সুস্থ-সবলভাবে বেঁচে থাকতে পুষ্টিকর খাবার খেতেই হবে। এর চাহিদা পূরণে শাকসবজির অবদান অনন্য। শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থসহ অন্যান্য অনেক পুষ্টি উপাদান। সে সাথে আঁশে ভরপুর। এসব পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, খাবারে রুচি আনে। এ ছাড়া হজমশক্তি বৃদ্ধিতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে যথেষ্ট সহায়তা করে। পুষ্টিবিদদের মতে, একজন পূর্ণবয়স্ক লোকের দৈনিক ২ শত গ্রাম শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমরা খাই মাত্র ৬০-৭০ গ্রাম। তাও আলুসহ। তাই চাওয়া-পাওয়ার এ গড়মিলে আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক দৈহিক এবং মানসিক অসুখে ভুগছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই হচ্ছেন শিশু ও নারী। মোট জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৭১ ভাগ লোক, বিশেষ করে মেয়েরা লৌহের অভাবে রক্তস্বল্পতার শিকার। একমাত্র ভিটামিন-এ’র অভাবে বছরে ৩১ হাজারেরও অধিক শিশু অন্ধ হয়ে যায়। চোখে কম দেখার সংখ্যা আরও বেশি। তবে সুস্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টির ঘাটতি যতটুকু তার চেয়ে বড় বাধা পুষ্টির উৎস সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা এবং অসচেতনতা। যারা দিন আনে দিন খায় তারাই কেবল পুষ্টিতে ভোগে তা কিন্তু নয়। বিত্তশালী শিশুরাও আজকাল শাকসবজি না খেয়ে রাতকানায় ভুগছে; যে কারণে ওরা চোখে চশমা পরতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ হাতের কাছে পাওয়া কচুশাক, কলমিশাক, হেলেঞ্চা, সজিনাসহ নানারকম শাকসবজি অভাবী মানুষের পুষ্টি সরবরাহ করে। সেজন্য বিভিন্ন শাকসবজির পুষ্টি ও ভেষজগুণ সম্পর্কে জেনে নেয়া দরকার।
অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি প্রতি বেলায় আমাদের শাকসবজি খাওয়া আবশ্যক। তবে তা হতে হবে অবশ্যই বিষক্রিয়ামুক্ত। এ বিষয়ে কৃষকদের যতটুকু আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন, তেমনি দরকার সবজি বিক্রেতাদেরও। তাই আসুন, এ ব্যাপারে নিজে সচেতন হই; অপরকেও করি উৎসাহিত এবং সবাই ভালো ও সুস্থ থাকি।
No comments