জেনেনিন ফুলকপির পুষ্টি ও ঔষধি গুনাগুন

  
ফুলকপি শীতের সবজি। পুষ্টিসমৃদ্ধ এ সবজি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও সুস্বাদু। এর ভাজি আর তরকারি খেতে দারুণ। ফুলকপির তৈরি সিঙ্গারা, চপ, ফুলরি, পুরি এসব খাবার খুবই মজাদার। ব্রোকলি ছাড়া অন্য যে কোনো সবজির তুলনায় ফুলকপিতে ভিটামিন-সি’র পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, এর প্রতি ১০০ গ্রামে ভিটামিন-সি রয়েছে ৯১ মিলিগ্রাম। অথচ করল্লায় এর পরিমাণ হচ্ছে ৬৮ মিলিগ্রাম, সাজিনায় ৪৫ মিলিগ্রাম, ওলকপিতে ৫৩ মিলিগ্রাম, মুলায় ৩৪ মিলিগ্রাম এবং টমেটোতে আছে ৩১ মিলিগ্রাম। ফুলকপিতে ভিটামিন-কে’র পরিমাণও রয়েছে যথেষ্ট। এর অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের মধ্যে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন ও ভিটামিন-বি  আছে যথাক্রমে ২.৬ গ্রাম, ৭.৫ গ্রাম, ০.১ গ্রাম, ৪১ মিলিগ্রাম, ১.৫ মিলিগ্রাম, ৩০ মাইক্রোগ্রাম এবং ০.০৫৭ মিলিগ্রাম। শরীর সুস্থ রাখার জন্য মানবদেহে ভিটামিন-সি খুবই দরকারি। তাছাড়া রয়েছে এর আরও কিছু ঔষধি গুনাগুন 
১. হৃদ-স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে ফুলকপিতে সালফারের যৌগ সালফোরাফেন থাকে যা ব্লাড প্রেশারের উন্নতিতে সাহায্য করে। গবেষণা মতে সালফোরাফেন ডিএনএ এর মিথাইলেশনের সাথে সম্পর্কিত যা কোষের স্বাভাবিক কাজের জন্য এবং জিনের সঠিক প্রকাশের জন্য অত্যাবশ্যকীয়, বিশেষ করে ধমনীর ভেতরের প্রাচীরের। সালফোরাফেন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ ধ্বংস করতে পারে এবং টিউমারের বৃদ্ধিকে বাঁধা দেয়। অন্য এক গবেষণায় জানা যায় যে, ফুলকপির সাথে হলুদ যোগ করে গ্রহণ করলে প্রোস্টেট ক্যান্সার নিরাময়ে ও প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
২. মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় ফুলকপিতে আরেকটি উপকারী যৌগ কোলাইন থাকে। কোলাইন একটি বি ভিটামিন। এটি মস্তিষ্কের উন্নয়নে সাহায্য করে। প্রেগনেন্সির সময়ে ফুলকপি গ্রহণ করলে ভ্রূণের মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে। গবেষণায় নির্দেশ করা হয়েছে যে, জ্ঞানীয় কাজের, শিক্ষার এবং স্মৃতির উন্নয়নে সাহায্য করে কোলাইন।
৩. শরীরকে বিষমুক্ত হতে সাহায্য করে ফুলকপির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শরীর পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে গ্লুকোসাইনোলেটস থাকে যা এনজাইমকে সক্রিয় করে এবং ডিটক্স হতে সাহায্য করে।
৪. প্রদাহ কমায় ফুলকপিতে ইন্ডোল ৩ কার্বিনোল বা I 3C থাকে যা একটি অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান। এটি শক্তিশালী ইনফ্লামেটরি রিঅ্যাকশন প্রতিরোধ করে।
৫. হজমের উন্নতি ঘটায় যেহেতু ফুলকপি ফাইবারের গুরুত্বপূর্ণ উৎস সেহেতু এটি হজমের উন্নতিতে সাহায্য করে। ওয়ার্ল্ডস হেলদিয়েস্ট ফুডস এর মতে, ফুলকপি পাকস্থলীর প্রাচীরের সুরক্ষায় সাহায্য করে। ফুলকপির সালফোরাফেন পাকস্থলীর হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে এবং পাকস্থলীর প্রাচীরে এর আবদ্ধ হওয়াকে প্রতিহত করে।
৬. ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ ফুলকপিতে ভিটামিন সি, বিটাক্যারোটিন, কায়েম্ফেরোল, কোয়ারসেটিন, রুটিন, সিনামিক এসিড সহ আরো অনেক উপাদান থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতির হাত থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেয়। এগুলো বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ধীর গতির করে এবং টিস্যু ও অঙ্গের ক্ষতি হওয়া প্রতিহত করে।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে পড়ার জন্য।

আরও পড়ুন

Online news

No comments

Powered by Blogger.